মানুষ -- ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প || শাহরিয়ার সোহাগ || পর্ব - ১২
মানুষরা জাহাজ থেকে নামতে শুরু করেছে। ওরা পাঁচ বন্ধু প্লান
মত খাবারের ধান্দা করতেছে। হঠাৎ একটা মানুষের কোলে ওদের এক ফরেন সজাতি দেখলো টুকি।
টুকি তো রীতিমত টাস্কি। এত্ত সুন্দর? যেন প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে গেলো টুকি। লাভ
এ্যাট দ্যা ফাস্ট সাইট। এর আগে এমন কাউকে সে দেখেনি। এত সুন্দর! এটাও সম্ভব! হালকা
বাদামী রঙের বিষাল লম্বা আর ঘন পশমে ওর পুরো গা ঢেকে আছে। খাঁড়া, উঁচু কান
রয়েছে। ওর লেজ সব সময় বাঁকানো অবস্থায় ওর পিঠের দিকে ঝুলে আছে। ও গা একদম ঝকঝক
করছে, এত পরিষ্কারভাবে থাকে। দেখতে ছোটখাটো। নাদুশনুদুশ। কোনো সুন্দরি
প্রতিযোগিতায় পুরষ্কার পাবেই পাবে।
টুকি ওর বন্ধুদেরকে এই ফরেনের কথা জানালো। বন্ধুদের বলে খোঁজ
নিতে গেলো এই ফরেন ঠিক কোন হোটেলে উঠেছে। ইশি, ইকি, তাহি, গুলু খাবার জোগাড় করে
জাকিরের দোকানের সামনের সমুদ্রপাড়ে গিয়ে বসলো। টুকি তখনও আসেনি। ওরা সবাই টুকির
আসার অপেক্ষায় আছে। টুকি তো প্রেমে পড়েছে। প্রেমে পড়াটাই স্বাভাবিক। এই ফরেন এত
সুন্দর দেখতে, প্রেমে না পড়াটা অস্বাভাবিক ছিল। জেটিঘাট থেকে একটা মানুষের কোলে
বসে এই ফরেন ভ্যানে করে হোটেলে যাচ্ছিল। আর টুকি ফরেনকে অনুসরণ করে তাদের পেছন
পেছন দৌঁড়ে যাচ্ছিল। এর আগে সে এত সুন্দর কাউকে দেখেনি। সে যেন স্বর্গের কোনো
পরীকে দেখেছে। না, সে পরীর থেকেও বেশি সুন্দর। তাকে আসলে কোনো উপমা দিয়ে পরিচয়
দেওয়া যাবে না। এই ফরেন যেন সব উপমারও ঊর্ধ্বে। হোটেল ফান্টুশে উঠেছে ওরা। খুব
বেশিদিন হয়নি এই হোটেলটা হয়েছে। যে মানুষটা এই হোটেলের মালিক সে রাজনীতি করে। তার
পেছনে সবসময়ই একদল সাঙ্গপাঙ্গ ঘোরে। সে নিজেরে এই দ্বীপের রাজা ভাবে। তাই তো কেয়া
বন কেটে সাফ করে, ইটের পরিবর্তে সমুদ্রের পাথর দিয়ে এই ফান্টুশ, হোটেল বানিয়েছে।
যদিও শুধু এই হোটেল না এখানকার আরো অনেক হোটেল, রিসোর্ট এই দ্বীপের বন উজাড় করে
সাগরের পাথর দিয়ে বানানো হয়েছে। এই দ্বীপে রড,
সিমেন্টসহ আধুনিক নির্মাণ সামগ্রী নেওয়ার অনুমতি নেই। এতে করে অনেকে স্থাপনা
নির্মাণ করা যাচ্ছে না। তবে প্রভাবশালীদের ক্ষেত্রে এ নিয়মের বালাই নেই। সাধারণ
লোকজন না পারলেও প্রভাবশালীরা ঠিকই রড-সিমেন্টের বাড়ি করছে। বহুতল ভবনের নির্মাণের
নিয়ম না থাকলেও এই প্রভাবশালীরা বহুতল ভবনও নির্মাণ করছে। স্থানীয়দের বাধা দিলেও
প্রভাবশালীদের বাধা দেয় না পরিবেশ অধিদফতর।
মানুষের অপরিকল্পিত উন্নয়ন আর ব্যাঙের ছাতার মতো এখানে সেখানে
বানানো এত এত বিল্ডিং গিলে খাচ্ছে এই সুন্দর দ্বীপকে। স্বচ্ছ পানি ও চারপাশজুড়ে
প্রবাল পাথরে ঘেরা এই সুন্দর দ্বীপটাতে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটকদের যাতায়াত, তাদের
অসচেতনতা, খামখেয়ালিতে পরিবেশ দূষণের কারণে এখানকার প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য
ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে অভিযোগ জানানোর জায়গাটা নেই। এই দ্বীপে যেকোনো ধরণের
বিল্ডিং গড়ে তোলার ব্যাপারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা অমান্য করে গড়ে উঠছে
একের পর এক রিসোর্ট, হোটেল, মোটেল ও রেস্টুরেন্ট। এসব অব্যবস্থাপনার কারণে
দ্বীপটির পরিবেশ দিনে দিনে অবনতির দিকে যাচ্ছে। এতে ধ্বংস হচ্ছে দ্বীপের
শৈবাল-প্রবাল, ঝিনুক, শামুক, সামুদ্রিক কাছিম, লাল কাঁকড়াসহ নানা ধরণের জলজ
প্রাণী। এত এত বিল্ডিং তৈরীর কারণে দ্বীপটি আস্তে আস্তে মাটির নিচে দেবে যাচ্ছে।
এই ফরেন যার কোলে, সে মনে হয় ওর মালিক। সাথে আরো বেশ
কয়েকজন মানুষ আছে। টুকি ওরে নতুন ক্রাশের সাথে একা কথা বলতে ভয় পাচ্ছিল। তাছাড়া
ফরেনের সাথে থাকা মানুষগুলো টুকিকে তো ওর কাছে যেতে দিবে না। তাই আপাতত এটুকুতে
খুশি হয়ে টুকি ওর বন্ধুদের কাছে যেতে যেতে ভাবছে ওর বন্ধুদেরকে এসব জানাতে হবে।
যেতে যেতে টুকিও স্বপ্ন দেখে জাকিরের দোকানে টিভিতে নায়ক নায়িকা গান গাইতে গাইতে
যেভাবে সমুদ্রের পাড়ে দৌঁড়ায়, সেও একদিন এই ফরেনকে নিয়ে সমুদ্রে পাড়ে সেভাবে
দৌঁড়াবে। সে তো সমুদ্রের পাড়েই থাকে। এতদিন শুধু দৌঁড়ানোর জন্য প্রেমিকা ছিল
না। তবে আজ টুকি তার প্রেমিকার সন্ধান পেয়েছে। টুকি মনে প্রাণে ঠিক করেছে সে এই
ফরেনের সাথেই প্রেম করবে। তার সাথে এই বাকি জীবন কাটাবে। তাদের সুখের সংসার হবে।
তাদের বাচ্চাকাচ্চা গুলোও তাদের মায়ের মত সুন্দর, গুলুমুলু হবে। এসব ভাবতে ভাবতে
টুকি আসলো জাকিরের দোকানের সামনের সমুদ্র পাড়ে।
কিরে তোর এতক্ষণ লাগলো? পাগল হয়ে গেছিস নাকি? - বললো গুলু।
পাগল তো হয়েছি বন্ধু। আমি প্রেমে পাগল হয়েছি। - ফুরফুরে মেজাজে
উত্তর দিলো টুকি।
নতুন আবার ক্রাশ খেয়েছিস? এটা তোর কত নাম্বার ক্রাশ? - প্রশ্ন
করলো ইকি।
কত নাম্বার ক্রাশ জানিনা। তবে লিখে রাখ, এটাই শেষ ক্রাশ। - উত্তর
দিলো টুকি।
লিখে রাখার মত শিক্ষিত আমরা না। তবে তুই বললি যখন মনের মধ্যে
মুখস্ত রাখলাম। - প্রতুত্তর দিলো ইকি।
কোন হোটেলে উঠেছে রে? - জানতে চাইলো তাহি।
হোটেল ফান্টুশে। - উত্তর দিলো টুকি।
কাছেই তো। - বললো ইশি।
বন্ধু তোদের একটা হেল্প লাগবে। - বললো টুকি।
কি হেল্প? - জানতে চাইলো গুলু।
আমি তারে আমার মনের কথা বলতে পারি নাই। ওর সাথে থাকা মানুষগুলো যদি
কিছু বলে এজন্য। আর নিজের প্রেমের কথা একা গিয়ে তারে বলি কিভাবে? তোরা
বন্ধু-বান্ধব সাথে থাকলে প্রপোজ করার সাহসটা পাবো। - বললো টুকি।
আরে ব্যাটা তোর জন্য যদি এটুকুই না করতে পারি তাহলে কিসের বন্ধু।
কখন যাবি বলিস। - বললো তাহি।
খাবার আনছি এখন চল খেয়ে নিই। - এই বলেই খাবার ভাগ করে দিল ইকি।
তোর নতুন ক্রাশ দেখতে কেমন রে? - প্রশ্ন করলো গুলু।
তাকে স্বর্গের পরী বললেও কম বলা হবে বন্ধু। সে পরী থেকেও সুন্দরী।
- উত্তর দিলো টুকি।
আচ্ছা তুই যে পরীর সাথে তুলনা করলি, তুই কি কখনো পরী দেখছিস? -
প্রশ্ন করলো ইশি।
দেখি নাই বন্ধু। তবে শুনছি পরী দেখতে অনেক সুন্দরী হয়। সিনেমায় তো
নায়ক তার নায়িকারে পরী বলে ডাকে। সুন্দরি না হলে কি আর পরী বলতো? আমার এই ক্রাশ
তার থেকেও বেশি সুন্দরী। - উত্তর দিলো টুকি। টুকি যেন এখনো পাগল হয়ে আছে প্রেমে
পড়ে।
খাচ্ছিস না কেন? - বললো গুলু।
আমি খাব না বন্ধু। আমার ভাগের এইটুকু কেক দিয়ে আমি তারে প্রপোজ
করবো। প্রপোজটা একটু স্পেশাল না হলে তো সে রাজি হবে না। - উত্তর দিলো গুলু।
আচ্ছা ঠিক আছে তোর নতুন ক্রাশের জন্য খাবার রাখছিস ভালো কথা।
আমাদের এখান থেকে একটু খা। আবার কখন খাবার জোগাড় করতে পারবো, তার কোনো ঠিক ঠিকানা
নেই। পেট খালি থাকলে পুরো দুনিয়া খালি খালি লাগবে। - টুকিকে বোঝালো তাহি।
বুঝলাম না। তোরা সবাই টুকির ভালোবাসা নিয়ে এত সিরিয়াস! আমিও যে
সিরিয়াসলি একজনকে ভালোবাসি, কই আমার জন্য তো তোরা কিছু করিস না। তাকে তো একটু
আমার হয়ে বুঝাস না।- নিজের কষ্টের কথা বললো ইকি।
ওরাও জানে তুই যাকে ভালোবাসিস তাকে বুঝিয়ে কোন লাভ হবে না। সে
রাজি হবে না। এই জন্য তারা আর কষ্ট করে বুঝায় না। - হাসতে হাসতে উত্তর দিলো তাহি।
সেদিন সন্ধ্যায় ওরা পাঁচ বন্ধু মিলে হোটেল ফান্টুশের পাশে
ঘোরাঘুরি করছিল সেই ফরেনকে দেখবে বলে। টুকি একবুক আশা নিয়ে এসেছে। প্রেমে পড়তে তো
বছরের পর বছর লাগে না, এক পলকেই প্রেমে পড়া যায়। টুকির অবস্থাও তাই। সমুদ্র পাড়ের
একটা হোটেল। হোটেলের সামনে বেশ খোলামেলা। দুপাশে দুটো দোলনা। আর বাঁশ কাঠের কয়েকটা
বেঞ্চ আছে। সমুদ্রপাড়ে হুদাই হাটাহাটি করে ক্লান্ত হয়ে আসা মানুষগুলো দোলনা বা
বেঞ্চে বসে রেস্ট নিতে পারে। অনেক মানুষ রেস্টও নিচ্ছে।
হোটেলের সামনের খোলা জায়গাতে সেদিন বারবিকিউ এর আয়োজন হয়েছিল।
একটা দোলনাতে সেই ফরেন একটা মানুষের কোলে বসে দোল খাচ্ছিলো। টুকি অপলক চোখে
চেয়েছিল তার দিকে। কি অপরূপা সুন্দরি সে। টুকির আফসোস তার ভেতরে শিক্ষাদীক্ষা নেই
বলে মনের মত করে অনেকগুলো উপমা ব্যবহার করতে পারছে না। যদি জানতো তাহলে প্রোপোজ
করার সময় পটাতে বেশ কাজে দিতো। এসব ভাবতে ভাবতে তার ক্রাশের দিকে হা করে তাকিয়ে
আছে টুকি। ততক্ষণে ওর চার বন্ধু বারবিকিউ এর ধোঁয়ার গন্ধে পোড়া মাংসের লোভে
বিমোহিত। ওরা যে এখানে এসেছে বন্ধুকে সঙ্গ দিতে, সাহস দিতে, সেটা যেন ভুলেই গেছে।
টুকি ওদের উপর রাগ দেখিয়ে ওদের এখানে আসার কারণ মনে করিয়ে দিলো। সবাই টুকিকে
সাহস দিলো এসপার ওসপার কিছু একটা করার। ফরেনের সাথে অবশ্য কয়েকটা বার চোখাচোখি
হয়েছে। তবে সেটা পর্যাপ্ত না। একটু হলেও কথা বলা দরকার। টুকি যে ওকে ঠিক কতটা
ভালোবেসে ফেলেছে সেটা তো তাকে বুঝানো দরকার। চোখ নাকি মনের কথা বলে। তবে এই
অন্ধকারে টুকির ক্রাশ টুকির চোখ ঠিক কতটা দেখতে পারছে সেটাতে টুকির নিজেরই সন্দেহ
আছে। ফরেনটা যে মানুষদের সাথে এসেছে তারাই বারবিকিউ করছে। সবাই বারবিকিউ তখন নিয়ে
ব্যস্ত। বক্সে ধুমধাড়াক্কা গান বাজতেছে। হৈ হুল্লোড় করছে মানুষগুলো। এই সুযোগে
টুকি সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে হোটেলের গেট দিয়ে হোটেলের সামনের খোলা জায়গাতে ঢুকে
গেল। টুকি যে অনেকক্ষণ ধরে তাকে ফলো করছে এটা ফরেন বুঝেছে। সে নিজেও বেশ কৌতূহলী
হয়ে আছে। টুকি এক পা দু পা করে এগিয়ে ফরেনের কাছাকাছি গেছে। তখনই মানুষগুলো টের
পেয়ে গেল। তারা ভেবেছে টুকি মাংস নিতে এসেছে। ব্যাচ, বাকিটা ইতিহাস।
কয়েকজন হাতে লাকড়ি নিয়ে টুকিকে ধাওয়া করলো। টুকি এক দৌঁড়ে হোটেল থেকে বেরিয়ে
গেল। টুকির পেছনে পেছনে ওর বন্ধুরাও দৌঁড়ে সাগরের পশ্চিমপাড়ে গিয়ে হাঁপাচ্ছে।
ওই শালার মানুষেরা আমারে মারলেও আমি এত কষ্ট পেতাম না যদি ওখানে
আমার ক্রাশ না থাকতো। ক্রাশকে প্রপোজ দেবো, তার কাছে পৌঁছে গেছি, ঠিক তখনই আমার
প্রেস্টিজ পাংচার করে দিলো এই শালার মানুষেরা। আর দুইটা মিনিট পাইলেই হইতো। - বুক
ভরা আফসোস নিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে বলছে টুকি।
থাক বন্ধু। কষ্ট পাস না। এত তাড়াতাড়ি ধৈর্য্য হারালে হবে না। ওই
ফরেন তো বুঝেছে তুই তাকে কিছু বলতে চাস। আজকে হয় নাই তো কি হয়েছে? কালকে আমরা
আবার আসবো। তুই কালকে আবার ট্রাই করবি। আমরাও চাই তুই তাকে তোর মনের কথা বলো। -
টুকিতে সান্ত্বনা দিচ্ছে গুলু।
আচ্ছা জাকিরের দোকানে টিভিতে যে মাঝে মাঝে দেখি অন্যদেশের মানুষ
প্রেমের টানে এই দেশে মানুষ চলে আসে। তাইলে আমাদের প্রেম নিয়েও কি নিউজ হবে? -
হঠাৎ উদ্ভট প্রশ্ন করে বসলো টুকি।
মনে হয় না নিউজ হবে। কারণ তোর এই ক্রাশ তো আগে থেকেই এই দেশে আছে।
সে তো তোর প্রেমের টানে এখানে আসে নাই। এখানে আসার পর তোর মন ধরে টান দিছে। - বললো
ইশি।
টান দিছে মানে? এখনো দিছে নাকি? আগের দিক তারপর বলিস। -
ইশিকে থামিয়ে দিলো ইকি।
বুঝছি তোর সহ্য হচ্ছে না। আমার একটা সুন্দর গুলুমুলু গার্লফ্রেন্ড
থাকবে এটা তোর হিংসে হয়। বন্ধুর সুসময়ে যে হিংসা করে সে তো ভালো না। - বললো
টুকি।
আচ্ছা বাদ দে। সেই কেক টুকু কি করছিস? - কেকের কথা মনে করিয়ে দিলো
তাহি।
কেক তো এখনো আমার কাছে আছে। - উত্তর দিলো টুকি।
আচ্ছা তাহলে রেখে দে। এটা দিয়ে কালকে আবার ওকে প্রপোজ করিস। - যোগ
করলো তাহি।
কি মনে হয় বন্ধু তোদের? ও রাজি হবে তো? - টুকির চোখে মুখে
যেন টেনশন।
রাজি হবে না মানে? আমাদের বন্ধু কি দেখতে কম সুন্দর নাকি? আমাদের
বন্ধু হলো নায়কের মত। সে তো এমন একটা পরীর থেকেও সুন্দরী গার্লফ্রেন্ড ডিজার্ভ
করে। - উত্তর দিলো গুলু।
তোর এই কথাটাই আমার ভালো লাগছে। এই কেকটা যদি আমার ক্রাশকে প্রপোজ
দেওয়ার জন্য না রাখতাম তাহলে আমি তোকে দিয়ে দিতাম। - বললো টুকি।
.png)


No comments