Header Ads

বাংলাদেশ যুদ্ধের নির্মমতা ভয়াবহতা জানে, তাই শান্তি চায় বাংলাদেশ || শাহরিয়ার সোহাগ

বাংলাদেশ যুদ্ধের নির্মমতা ভয়াবহতা জানে, তাই শান্তি চাShahriar Sohag, শাহরিয়ার সোহাগ, romantic bangla poem, bangla poem for love, small bangla poem, sh

বাংলাদেশ একটি ব্যতিক্রমী দেশ। পৃথিবীতে এমন আর কোনো দেশ নেই, যার জন্ম ভাষার ওপর ভিত্তি করে। আমাদের স্বাধীনতা কেবল একটি মানচিত্র নয়, এটি অনেক ত্যাগ, অনেক কষ্ট এবং অনেক বেদনার ফল।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মানুষ তাদের মুক্তির জন্য যুদ্ধ করেছে। সেই যুদ্ধ ছিল আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। নয় মাসের সেই যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন প্রায় ৩০ লাখ মানুষ, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এখন পর্যন্ত কোন যুদ্ধে সর্বোচ্চ প্রাণহানির ঘটনা।। সে সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন প্রায় দুই লাখ নারী। অনেক ভারতীয় ও পাকিস্তানি সৈন্যও প্রাণ হারিয়েছেন। এই সবকিছু একসঙ্গে মিলেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা এসেছে।

আজ দেশের প্রতিটি গ্রাম, শহর, বধ্যভূমি আর স্মৃতিস্তম্ভ সেই যন্ত্রণার ইতিহাস বহন করছে। আমরা দেখেছি কেমন করে শিশুর মুখ বন্ধ হয়ে গেছে গুলির শব্দে, কেমন করে মায়েরা হারিয়েছেন সন্তান, নারীরা হয়েছেন লাঞ্ছিত, আর স্বপ্ন ভেঙে গেছে আগুনের গোলায়।

যুদ্ধ শেষ হলেও তার ক্ষত সহজে মুছে যায় না। যুদ্ধের পর বাংলাদেশ ছিল ধ্বংসস্তূপ। চারদিকে দারিদ্র্য, অনাহার আর ভাঙা ঘরবাড়ি। সেই ভগ্ন দশা থেকে ধীরে ধীরে আমরা উঠেছি। আমাদের উন্নয়ন এসেছে অনেক কষ্ট করে, বহু বছরের শ্রমে।

এই যুদ্ধ আমাদের শিখিয়েছে— স্বাধীনতা পাওয়া যেমন কঠিন, তা ধরে রাখা আরও কঠিন। যুদ্ধ কোনো সমাধান নয়। যুদ্ধ জাতির স্বপ্ন ভেঙে দেয়। মানুষকে পেছনে ফেলে দেয় অনেক বছর।

এই কারণেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি খুব স্পষ্ট। আমরা বলি, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।’ আমরা শান্তি চাই। কূটনৈতিকভাবে সমস্যার সমাধান করতে চাই।

বাংলাদেশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে অন্যতম বড় ভূমিকা রাখছে। এটা প্রমাণ করে, আমরা যুদ্ধ থামাতে চাই, যুদ্ধ প্রতিরোধ করতে চাই। আমরা মানবতার পক্ষে।

আমরা জানি যুদ্ধ কীভাবে মানুষকে শেষ করে দেয়। কীভাবে একটি প্রজন্ম দারিদ্র্য আর দুর্ভোগে ডুবে যায়। তাই এখন যখন বিশ্বের নানা দেশে যুদ্ধের হুমকি বাড়ছে, তখন বাংলাদেশ স্পষ্টভাবে বলছে— না, আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা চাই শান্তি, সহনশীলতা, স্থিতিশীলতা ও সম্মান।


বাংলাদেশের মানুষ উন্নয়ন চায়। চায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কাজ। আমরা প্রতিযোগিতা চাই জ্ঞানে, প্রযুক্তিতে, শিল্পে— কে কত বেশি ধ্বংস করতে পারে, সেই প্রতিযোগিতা চাই না।

আমরা এমন একটি পৃথিবী চাই, যেখানে মানুষের অধিকার থাকবে। কেউ অনাহারে থাকবে না, কেউ উদ্বাস্তু হবে না। কোনও শিশু যুদ্ধের মধ্যে বড় হবে না।

আজকের বিশ্বে যখন চারদিকে সংঘাত বাড়ছে, তখন বাংলাদেশের বার্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যুদ্ধ চাই না, কারণ আমরা জানি যুদ্ধ কত ভয়ানক। আমরা শান্তি চাই, কারণ শান্তির মধ্যেই আছে উন্নয়ন, মানবতা আর ভবিষ্যতের নিরাপত্তা।

যুদ্ধ রেখে যায় শত প্রজন্মের কান্না। আর শান্তি রেখে যায় গর্ব। বাংলাদেশ গর্বের পথ বেছে নিয়েছে— বেছে নিয়েছে চিরশান্তির পথ।

No comments

Powered by Blogger.