কেন ইসরায়েল ১০,০০০ ফিলিস্তিনিকে বন্দি করে রেখেছে || শাহরিয়ার সোহাগ
ইসরায়েল ও দখলীকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বর্তমানে প্রায় ১০,০০০ ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি রয়েছেন। ফিলিস্তিনি অধিকার সংগঠন আদ্দামির তথ্যমতে, এদের অধিকাংশই রাজনৈতিক বন্দি, যাদের মুক্তির দাবিতে ফিলিস্তিনিরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
বন্দিদের প্রোফাইল :
- ৩,৪৯৮ জন কোনো অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই আটক
- ৪০০ জন শিশু ও ২৭ জন নারী
- ২৯৯ জন দণ্ডিত, যারা আজীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন
বিশেষ করে বিচার ছাড়াই আটক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী “অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিটেনশন” ব্যবস্থার আওতায় বন্দিত্ব চালিয়ে যাচ্ছে। এই পদ্ধতিতে “গোপন প্রমাণ”-এর ভিত্তিতে, বন্দি ও তার আইনজীবীকে কোনো কারণ না দেখিয়েই, নতুন করে ছয় মাস করে বারবার মেয়াদ বাড়ানো হয়। এতে নারী ও শিশুরাও বাদ পড়ছে না।
২০২৩ সালের শেষ দিক থেকে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধের পর থেকে, ফিলিস্তিনি বন্দির সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। ইসরায়েলি বাহিনী পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়েছে, যার ফলে হাজার হাজার মানুষ বিনা বিচারে আটক হয়েছেন।
ফিলিস্তিনিদের কাছে এই বন্দিরা শুধুই অপরাধী নন, বরং তাদের অধিকারের জন্য লড়াইরত সংগ্রামী মানুষ। তারা মনে করেন, এসব মানুষ ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোয় বা প্রতিরোধ আন্দোলনে যুক্ত থাকায় আটক হয়েছেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, ইসরায়েলের এই আটক নীতি মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি থাকা এই ১০,০০০ মানুষ শুধু সংখ্যায় বড় কোনো পরিসংখ্যান নয়। তাদের প্রত্যেকের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে পরিবার, শিশুদের ভবিষ্যৎ ও একটি জাতির স্বাধীনতা আন্দোলন। বিচারহীন এই বন্দিত্ব পরিস্থিতিকে বিশ্ব সম্প্রদায় কীভাবে দেখছে এবং কতদিন এভাবে চলবে—সেই প্রশ্ন এখন আন্তর্জাতিক মহলে দিন দিন জোরালো হচ্ছে।


No comments