Header Ads

জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ || শাহরিয়ার সোহাগ

জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ, Shahriar Sohag, শাহরিয়ার সোহাগ, romantic bangla poem, bangla poem for love, small bangla poem, sh

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশের অন্যান্য শহরে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের রাজধানীতে বায়ুদূষণ এর মধ্যে একটি বড় সমস্যা। যেহেতু দূষণের কোন বাউন্ডারি নেই, তাই আমরা প্রতিনিয়ত আশেপাশের শহর ও দেশের শিল্পায়নের দ্বারা সৃষ্ট দূষণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। আন্তর্জাতিক এই নেটওয়ার্ক ঢাকার মতো ক্ষতিগ্রস্ত শহরগুলোর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দিতে পারে। এর ফলে পার্টনারশিপ ফর হেলদি সিটিজ নেটওয়ার্কের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে। আমাদের শহরের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উন্নত দেশ ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার নিকট থেকে ঋণ সহায়তা পাওয়ার বিষয়ে আমরা আগ্রহী না। জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী শিল্পোন্নত দেশগুলো লস এন্ড ড্যামেজ তহবিলের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা দিতে দায়বদ্ধ। বিশ্বের বিভিন্ন শহরে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে গৃহীত কার্যক্রম বিষয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। আমার জন্য এই অভিজ্ঞতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঝড়-ঝন্ডা, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, উচ্চ তাপমাত্রা, ফ্লাশ-ফ্লাড ইত্যাদির তীব্রতা ত্বরান্বিত করে। বাংলাদেশে আয় ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অনন্য অবদানকারী হলো কৃষিক্ষেত্র। শস্য উৎপাদন গ্রামীণ আয় বৃদ্ধি করে এবং দরিদ্র মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে। সব কৃষি কাজের ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব কৃষিকে চরম ঝুঁকির ভেতর ফেলছে।


 গ্রিন হাউজ গ্যাসের প্রতিনিয়ত বৃদ্ধির কারণে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এর প্রভাবে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাচ্ছে, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত এবং চরম ভাবাপন্ন জলবায়ুর পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্রতা পৃথিবী ব্যাপী জনসংখ্যার বৃদ্ধি এবং কৃষিসম্পদ কমে যাওয়াতে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। এদিকে বাংলাদেশে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও পরিবেশ সংরক্ষণে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে বাংলাদেশ ও নেপাল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারির বৈঠক হয়।

পরিবেশ ধ্বংস রোধে আমাদের সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। জলবায়ু প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। পাহাড়, নদী, সমুদ্রসহ প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করতে হবে। পরিবেশ সংরক্ষণ শুধু ব্যক্তি স্বার্থের বিষয় নয়, এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদের দায়িত্ব। আমরা চাই নান্দনিকতা ও প্রকৃতির জন্য বিখ্যাত থাকুক, দূষণের জন্য নয়। জাহাজ ভাঙা শিল্প থেকে সৃষ্ট দূষণ, পাহাড় কাটা ও কৃষিজমি রক্ষা করতে। আমরা যদি প্রকৃতিকে রক্ষা করে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাই, তবেই টেকসই ভবিষ্যৎ গড়া সম্ভব হবে। অন্তত বিগত দুই দশক ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বাংলাদেশেও সুস্পষ্ট। ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশ সবসময় দুর্যোগপ্রবণ। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের সর্বাধিক ভুক্তভোগীদের অন্যতম বাংলাদেশ। ভূ-প্রকৃতিগতভাবে বাংলাদেশ সমতল ও নিচু ভূমি এলাকা নিয়ে গঠিত। এ দেশের ৮০ শতাংশের বেশি জমি বন্যাপ্রবণ। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যার ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম। বাংলাদেশের প্রায় ৪১ শতাংশ মানুষ জীবিকার জন্য কৃষির ওপর নির্ভরশীল। ভারী বৃষ্টিপাত, জলোচ্ছ্বাস বা দীর্ঘস্থায়ী বন্যা এসব মানুষের ওপর সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গত এক দশকে বায়ুমণ্ডলে কার্বন নির্গমনের হার বেড়েছে। কার্বনসৃষ্ট গ্রিনহাউস গ্যাস বায়ুমণ্ডলকে এতটাই উত্তপ্ত করছে। এই ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার ফলে গ্রীষ্মকালে ফসলের চাষাবাদ বা স্বাভাবিক কাজকর্ম করা মানুষের কাছে অসহনীয় হয়ে উঠবে। জার্মান ওয়াচ ২০২১-এর গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্সের হিসাব অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতি সাতজনে একজন বাস্তুচ্যুত হয়ে ‘ক্লাইমেট রিফিউজি’তে পরিণত হতে পারে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১৯ দশমিক ৬ ইঞ্চি বা ৫০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশ প্রায় ১১ শতাংশ ভূমি হারাতে পারে এবং এ প্রক্রিয়ায় প্রায় ১ কোটি ৮০ লাঁখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে।

বাংলাদেশের মোট ভূখণ্ডের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ভূমি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৫ ফুটেরও কম উচ্চতায় অবস্থান করছে। ২১০০ সালের প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা যদি ৫ থেকে ৬ ফুট বৃদ্ধি পায় তবে বাংলাদেশের প্রায় ৫ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে ‘ক্লাইমেট রিফিউজি’তে পরিণত হতে পারে। ১৯৭৩ সালে সমুদ্রের নোনাপানিতে প্লাবিত হতো বাংলাদেশের প্রায় ৮ দশমিক ৩ মিলিয়ন হেক্টর কৃষিজমি। অথচ ২০০৯ সালে এসে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১০৫ দশমিক ৬ মিলিয়ন হেক্টর। গত ৩৫ বছরে বাংলাদেশের কৃষিজমিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ২৬ শতাংশ।


No comments

Powered by Blogger.