Header Ads

অপারেশন সিন্ধুর পরিণতি ও বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া || শাহরিয়ার সোহাগ

অপারেশন সিন্ধুর পরিণতি ও বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া, Shahriar Sohag, শাহরিয়ার সোহাগ, romantic bangla poem, bangla poem for love, small bangla poem, sh

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আবারো চরমে পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের ৭ মে ভারত তার সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে “অপারেশন সিন্ধুর” নামক একটি ব্যাপক বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে। এই হামলা ছিল ২২ এপ্রিলের পাহালগামে পর্যটকদের উপর হামলার প্রতিশোধ, যেখানে ২৬ জন নিহত হয়। এর ফলে উভয় দেশের মধ্যে তাৎক্ষণিক পাল্টা হামলা ও বৈশ্বিক উদ্বেগ শুরু হয়।


অপারেশন সিন্ধু : পাকিস্তানে ভারতের হামলার বিস্তারিত

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে তারা পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে নয়টি স্থানে সুনির্দিষ্ট হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি, এই জায়গাগুলোতে সন্ত্রাসী ঘাঁটি ছিল। তবে পাকিস্তান বলেছে, হামলায় মসজিদ, স্কুল ও হাইড্রোইলেকট্রিক স্থাপনাও ধ্বংস হয়েছে।

পাকিস্তান জানিয়েছে ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে এবং অন্তত ৪৬ জন আহত হয়েছে। মুজাফফরাবাদ ও কোটলি এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে, ভারতীয় কাশ্মীরে পাকিস্তানি গোলাবর্ষণে ১০ জন নিহত হয়েছে বলে ভারত দাবি করেছে।

পাকিস্তানের দাবি, তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে, যদিও ভারত এই দাবির বিষয়ে কিছু বলেনি।


আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

  • ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও জার্মানি উভয় পক্ষকে সংযম দেখাতে বলেছে।
  • ইরান ও কাতার মধ্যস্থতা করতে চেয়েছে।
  • তুরস্ক ও চীন ভারতের হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
  • মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও উভয় দেশের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগে রয়েছেন।
  • আন্তর্জাতিক পারমাণবিক অস্ত্র বিলুপ্তি প্রচারাভিযান (ICAN) সতর্ক করেছে যে, এই উত্তেজনা পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে যেতে পারে, যার ফলে লাখো মানুষ মারা যেতে পারে এবং বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে।


নাগরিক জীবন ও দৈনন্দিন প্রভাব

উভয় দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে মানুষ তাদের বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। পাকিস্তানে স্কুল-কলেজ বন্ধ করা হয়েছে এবং হাসপাতালে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ভারতে জরুরি মহড়া চলছে দিল্লি, হরিয়ানা, মুম্বাইসহ বিভিন্ন জায়গায়।


রাজনৈতিক ও সামরিক প্রতিক্রিয়া

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, অপারেশন সিন্ধুর লক্ষ্য ছিল শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি ধ্বংস করা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারতীয় সেনাবাহিনী গর্বিত। অন্যদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এই হামলাকে “অন্যায় ও কাপুরুষোচিত” আখ্যা দিয়ে প্রতিরোধের ঘোষণা দেন। ভারত ও পাকিস্তানের বিরোধীদলীয় নেতারাও তাঁদের সশস্ত্র বাহিনীর পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন।


ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ : ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

ভারত ও পাকিস্তান ইতিপূর্বে চারটি যুদ্ধ করেছে, যার মধ্যে তিনটিই কাশ্মীর নিয়ে। ২০১৬ এবং ২০১৯ সালের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ছিল সীমিত। কিন্তু ২০২৫ সালের অপারেশন সিন্ধু ছিল সবচেয়ে বড় সামরিক পদক্ষেপ যা ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর দেখা গেছে।

ভবিষ্যত কী ?

বর্তমানে সরাসরি যুদ্ধ এড়ানো গেলেও উত্তেজনা এখনও রয়েছে। উভয় দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক এখনো বজায় থাকলেও সেনা ও রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য যুদ্ধোন্মাদনার ইঙ্গিত দেয়। আন্তর্জাতিক মহলের মধ্যস্থতা ছাড়া এই সংঘাত আরও বিস্তৃত হতে পারে।

বিশ্ব তাকিয়ে আছে। সামনের কয়েকটি দিন পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, সেটিই নির্ধারণ করবে।


অপারেশন সিন্ধু কী ? 

ভারতের সামরিক অভিযান যা পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে হামলা করে।


এই সংঘাতে কতজন মারা গেছেন ?

পাকিস্তান বলছে ২৬ জন বেসামরিক নিহত হয়েছে; ভারত বলছে ১০ জন নিহত।


এই উত্তেজনা কি পারমাণবিক যুদ্ধে পরিণত হতে পারে ?

এখনো ঝুঁকি কম, তবে ICAN বলেছে বড় সংঘাত হলে বিপর্যয় নেমে আসবে।


আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কী বলছে ?

সবাই শান্তি ও সংযম চাচ্ছে, কেউ কেউ মধ্যস্থতা করতে আগ্রহী।


এই যুদ্ধের প্রভাব কী ?

বিমান চলাচল ব্যাহত, স্কুল বন্ধ, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত।

No comments

Powered by Blogger.