আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ | হিসাবনিকাশ কার কেমন || শাহরিয়ার সোহাগ
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার আন্দোলনে বিএনপি অংশ নেয়নি; তবে এ নিয়ে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটিকে সমর্থন করেছে তারা।
নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় আওয়ামী লীগ যেহেতু নির্বাচন করতে পারবে না, সে প্রেক্ষাপটে বিএনপির রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী একজন কমলো। সেটিই বিএনপির জন্য লাভের বিষয়। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় এনসিপি, এবং জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামপন্থীদের লাভের অঙ্ক ভারী হয়েছে। কারণ এসব দল ও সংগঠন গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার শাসনের পতনের পর থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করে আসছিল। এখন তাদের আন্দোলনের মুখে দাবি পূরণ হলো। এছাড়া রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরবর্তী পরিস্থিতিতে এসব দলের প্রভাব নিয়েও রাজনৈতিক অঙ্গন এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা আলোচনা ছিল। এখন আওয়ামী লীগ কার্যত নিষিদ্ধ হওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকার ও পরিস্থিতির ওপর এনসিপি এবং জামায়াতসহ ইসলামপন্থী দল ও সংগঠনের প্রভাবের বিষয়টা আবার সামনে এসেছে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।
তবে এসব দল ও সংগঠনের লাভের খতিয়ানেও তারতম্য আছে বলে বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন। তাদের মতে, এই আন্দোলন শুরু করেছিল এনসিপি। কিন্তু জামায়াতসহ ইসলামপন্থীদের হাতে এর নিয়ন্ত্রণ চলে গিয়েছিল। এর প্রমাণ হিসেবে শাহবাগের অবস্থান কর্মসূচিতে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে বাধা দেওয়া এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বিচার হওয়া জামায়াতের নেতা গোলাম আজম ও মতিউর রহমান নিজামীর নামে স্লোগান দেওয়ার ঘটনাগুলোও উল্লেখ করেন বিশ্লেষকেরা। ওই ঘটনাগুলো এনসিপিকে বিতর্কের মুখে ফেলেছে। যদিও দলটি বিবৃতি দিয়ে এর দায় অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, যারা এ ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে দায় তাদের।
প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে যেখানে কিছুদিন আগে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমন এলাকায় পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে আন্দোলনকারীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। সরকারের প্রশ্রয় সেখানে স্পষ্ট হয়েছে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে সরকারের ওপর চাপ থাকতে পারে। কিন্তু যে প্রক্রিয়ায় তা করা হলো বা ঘটনাপ্রবাহ যা দৃশ্যমান হয়েছে, সেটি সরকারের অবস্থানের বিষয়টি প্রমাণ করে। তবে সরকারের একজন উপদেষ্টা এসব বক্তব্য মানতে রাজি নন। তিনি বিবিসির সঙ্গে আলাপে দাবি করেন, এই আন্দোলনের সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।


No comments