Header Ads

মানুষ -- ভিন্ন চোখে মানুষের গল্প || শাহরিয়ার সোহাগ || পর্ব - ১৪

 

Shahriar Sohag, শাহরিয়ার সোহাগ, মানুষ, উপন্যাস, Novel, romantic bangla Novel, bangla Novel for love,  bangla Novel, কুকুর নিয়ে গল্প, পশু নিয়ে গল্প

গোসল করে ক্লান্ত হয়ে ক্ষুধার্ত পেটে ওরা আসলো জাকিরের দোকানের সামনে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে জাকিরের দোকানের সামনে না আসলে ওদের খাবার হজম হয় না। যদিও হজম হওয়ার মতো খাবার পেটে না থাকলেই ওরা জাকিরের দোকানের সামনে আসে। ইদানিং ওরা নতুন অ্যাক্টিং শুরু করেছে। জাকিরের দোকানের সামনে জিভ বের করে ইচ্ছে করে হাপাতে থাকে। জাকির অবশ্য এখনো গোপন চালাকিটা জানতে পারেনি। তাই মায়া দয়ায় সকাল সকাল ওদেরকে একটু রুটি বিস্কুট খেতে দেয়। আর জাকিরের বাড়ির পচা ভাত, বাসি তরকারি, এটাতো ওদের পাঁচ বন্ধুর জন্য অনেক আগে থেকেই বরাদ্দ। জাকিরের টাকা পয়সা কম, চোখের দৃষ্টি কম। তবে মনটা বিশাল বড়। তা না হলে ওদের পাঁচ বন্ধুকে নিয়মিত খাবার দেওয়া চাট্টিখানি কথা না। জাকিরের বাড়ির লোকজনও ওদের পাঁচ বন্ধুকে ভালোভাবে মেনে নিয়েছে। জাকিরের ছোট ছেলে হোটেল থেকে মাঝে মাঝে পচা বাসি খাবার আনে ওদের জন্য। জাকিরের নাতিনটা মাঝেমাঝে ওদের সাথে খেলা করে। দিনে দিনে ওরা পাঁচ বন্ধু জাকিরের পরিবারের সদস্য হয়ে উঠেছে। জাকির ওদেরকে গালি দেয়, মারে বকাবকি করে, কিন্তু ঠিকই খোঁজ নেয়, ভালোবাসে। বড় কথা হচ্ছে খেতে দেয়।

 

 

এই যে সকাল সকাল আমার বাঘের বাচ্চা গুলো এসে হাজির - জাকির এখন এদেরকে বাঘের বাচ্চা বলে ডাকে। তবে জাকির কি ভালোবেসে, সম্মান দিয়ে ওদেরকে প্রশংসা করছে। নাকি খোঁচা মেরে অপমান করছে সেটা বোঝার মত জ্ঞানবিদ্যা ওদের ভিতর নেই। না থাকাটাই স্বাভাবিক। ওদের কথা হচ্ছে জাকির ওদেরকে যা ই বলুক তাতে ওদের কোন আপত্তি নেই। শুধু এখন যেভাবে ভালোবাসে, যেভাবে খেতে দেয় সেটা দিলেই ওরা খুশি। জাকিরের কাছে ওদের এর থেকে বেশি কিছু চাওয়ারও নেই। ছোট্ট একটা চায়ের দোকানে কতই বা রোজগার করে সে। এই অল্প রোজগারে প্রতিদিন তো তার সাধ্যমত ওদেরকে খাওয়ায়। এই যেমন এখন একটা বিস্কুটের প্যাকেট ছিঁড়ে ওদেরকে গালে তুলে বিস্কুট খাইয়ে দিচ্ছে। প্রতি চিবোনীতে মস মস শব্দে ওদের বোঝার বাকি নেই বিস্কুটটা টাটকা। জাকিরের দোকানে অন্য দুজন মানুষকে চা খাইতে দেখে টুকির মনে মনে শখ হলো ইস সেও যদি একটু চায়ে বিস্কুট চুবিয়ে খেতে পারতো! তবে সাহস করে সেটা বলতে পারছে না। বললে যতটুকু খাবার জুটছিল, সেটা নাও জুড়তে পারে। এমনিতে জাকির একদিন রাগ করে ওদেরকে বলেছিল কুকুরের পেটে ঘি ভাত সয় না। এই কথাটা টুকির খুব মাইন্ডে লেগেছিল। চাওয়ার তো কোন শেষ নেই। মন তো কত কিছুই চায়। সব চাওয়া কি আর পূরণ হয়? কিও পেট্রার সাথে প্রেম করতে চাওয়ার ইচ্ছাটাই পূরণ হলো না। সেখানে চায়ে বিস্কুট চুবিয়ে খাওয়া তো খুবই সামান্য ব্যাপার। দোকানে জাকিরের নাতিন এসেছে। নাতিনের হাতে কোন খাবারের প্যাকেট দেখলে ওরা পাঁচ বন্ধু নাতিনের সাথে খেলা করে। খেলার ছলে টুক করে নাতিনের থেকে খাবারের প্যাকেট টা নিয়ে বালিতে ফেলে দেয়। এই দুষ্টু বুদ্ধি অবশ্য ইকির মাথা থেকে এসেছে। জাকির পড়ে যাওয়া খাবার ওর নাতিনকে খাওয়ায় না। শেষমেষ ওটা ওদের ৫ বন্ধুর ভাগ্যেই জোটে। ওরা জানে কাজটা ঠিক না। তবে পেটে ক্ষুধা থাকলে এত ভালো খারাপ হিসেব করতে মন চায় না।

 

 

 

 

জেটিঘাতে জাহাজ ফেরার সময় হয়েছে। ওরা পাঁচ বন্ধু খাবারের সন্ধানে জেটিঘাটে অপেক্ষায় থাকা মানুষদেরকে পটানোর চেষ্টা করছে। পটানোর জন্য ওদের আবিষ্কৃত বিভিন্ন ভং করছে। এখানে এত ভিড় এত মানুষ! এর মধ্যেও একটা মানুষকে ওরা বই পড়তে দেখে অবাক হলো। ইকি কাছে গিয়ে দেখে হ্যাঁ সত্যিই সে বই পড়ছে। ইকি ওর কাছে গিয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে আছে। বই পাগল মানুষগুলো নাকি দয়ালু হয়। মানুষটার কাছে গিয়ে বসাতেই সে ইকির মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে দিলো। ইকির চোখ তখনো বইয়ের দিকে।

: কি? কি দেখছিস? আমি কি বই পড়ছি? এটা ডাক্তার আবিদা সুলতানার লেখা মানসিক স্বাস্থ্য বই। আমাদের শুধু শরীর না, কখনো কখনো মনও অসুস্থ হয়। আর তখন আমাদের মনের চিকিৎসার দরকার হয়। আর আমরা তো জানি না আমাদের মনের কি কি রোগ হতে পারে। এই বইয়ে ডাক্তার এই রোগগুলো নিয়েই কথা বলেছেন।

ইকি বই থেকে চোখ সরিয়ে তাকালো মানুষটার দিকে।

: আমার কথা কি কিছু তোর মাথায় গেছে? কিছু খাবি?

ইকি তাও ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে।

: দেখ, বই আমি অনেক ভালোবাসি। তুই যদি কিছু খেতে চাস তাহলে তোকে রুটি কলা বিস্কুট দিতে পারি। কিন্তু যেভাবে বইয়ের দিকে তাকিয়ে আছিস মনে হচ্ছে তো তুই বই নিবি। এই বই নিয়ে তুই কি করবি বল তো? পড়তে তো পারবি না। তাহলে বই নিয়ে কি করবি? তাছাড়া আমি কাউকে বই দিই না। কেউ বই ধার নিলে ফেরত দিতে চায় না। আর এই মানসিক স্বাস্থ্য বই তো না ই। এই বইয়ে অনেক ইনফরমেশন আছে। আমারই এখনো পড়া শেষ হয়নি।

ইকি ভাবছে বইটা কি নিয়ে লেখা সেটা তো জানা হয়ে গেছে। আর বই পড়ার মতো শিক্ষিত তো সে না। এরচেয়ে রুটি কলা খেলে একটু পেট ভরবে।

ওর অন্য বন্ধুরাও খাবারের সন্ধানে মানুষের কাছে যাবার চেষ্টা করছে। কেউ খাবার দিচ্ছে কেউ উষ্ঠা লাথি দিচ্ছে। হঠাৎ কিওপেট্রাকে দেখে গুলু দৌঁড়ে টুকিকে খবর দিতে গেল। গুলুর কথা শুনে টুকির মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। আর বাতাস ভরা বিচ্ছেদের গন্ধ। কিওপেট্রা চলে যাচ্ছে। আর কখনো ওদের দেখা হবে না। কিওপেট্রা যদি আবার কখনো এই নোংরা দ্বীপে আসে। আর ততদিন যদি টুকি বেঁচে থাকে তাহলে দেখা হতেও পারে। তবে অমানবিক এই মানুষের দ্বীপে সেটা অসম্ভব বটে। টুকি অনেক চেষ্টা করলো কাছে গিয়ে কিওপেট্রার সাথে একটু কথা বলতে। কিন্তু সুযোগ মিললো না। তবে কিওপেট্রাও দেখেছে দূরে বসে অপলক দৃষ্টিতে তাকে দেখছে টুকি। টুকি ভাবছে শেষ মুহূর্তেও যদি কিওপেট্রার মন গলে! অনেক সিনেমাতে সে দেখেছে একদম শেষ মুহূর্তে, মানে বিয়ে বাড়িতে কবুল বলার আগেই মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। টুকি সেরকম কিছুই ভাবছে। জেটি ঘাটে জাহাজ ভিড়ার পর সব মানুষ যখন জাহাজে উঠবে ঠিক সে সময়ে হলেও যেন কিওপেট্রা দৌঁড়ে ওর কাছে চলে আসে। এজন্যই টুকির এই অপেক্ষা।

জাহাজ জেটিঘাটে আসলো। মানুষ নামলো, মানুষ উঠলো। কিওপেট্রাও চলে গেলো। যাওয়ার সময় শুধু একবার পেছনে তাকালো। এটাই ওদের শেষ দেখা। আর তাতেই টুকির মন বিরহে খানখান হয়ে গেল। কিছুতেই সে মেনে নিতে পারছে না, সে যাকে এত ভালোবেসেছে সে চিরদিনের জন্য হারিয়ে গেছে তার থেকে। যদিও কিওপেট্রা কখনোই, কোন সময়ের জন্যই টুকিকে ভালবাসেনি। এই ভালোবাসাটা ছিল শুধু টুকির।

সমুদ্রপাড়ে বসে ওরা পাঁচ বন্ধু আড্ডা দিচ্ছে। টুকির ক্রাশ এই দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছে। তাই টুকির মন খারাপ বাকি চারজন মিলে টুকির মন ভালো করার ট্রাই করছে। এই দ্বীপের মানুষের থেকে ওরা একটা গান শুনেছিল - চলে গেছো তাতে কি নতুন একটা পেয়েছি, তোমার চেয়ে অনেক সুন্দরি। এই গানটাই ওরা সবাই মিলে গাচ্ছে।

এই ছাতার মাথা গান বাদ দে। এই গানটা আমার সাথে যায় না। অন্তত ২ টা কারণে যায় না। - সবাইকে থামিয়ে দিলো ইকি।

কোন ২ টা কারণ? - প্রশ্ন করলো তাহি।

আমি নতুন কাউকে পাইনি। আর এই দ্বীপে কিওপেট্রার মত সুন্দরি কেউ নেই। - সবাই হেসে উঠলো।

নিজেদের এই খুনশুঁটির মধ্যে হঠাৎ গুলু দূর থেকে দেখলো যে দ্বীপে ঘুরতে আসা একটা মানুষ পানিতে ছটফট করছে। যেন ডুবে যাচ্ছে। বাঁচার আকুতি জানাচ্ছে। আর তার থেকে অল্প একটু দূরে আর একটা মানুষ দাঁড়িয়ে সেটা ভিডিও করছে। অদ্ভুত প্রাণী মানুষ, সবসময় ভাইরাল হতে চায়। একজন ডুবে মরে যাচ্ছে, তাকে না বাঁচিয়ে সে মরার দৃশ্য ভিডিও করছে। গুলুর দেখাদেখি ওর বাকি বন্ধুরাও এতক্ষণ সেসব ই দেখছিল। ওরা ডুবে যাওয়া মানুষটাকে বাঁচানোর জন্য অন্য মানুষদের জোগাড় করতে চিৎকার করে ছুটে এলো। ওদের চিৎকারে সমুদ্রপাড়ে ওই অংশের মানুষগুলোও ভাবছে কিছু একটা হয়েছে নিশ্চয়। এরপর যা দেখা গেল তা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না ওরা। লাফালাফি করা মানুষটা নিজে নিজেই স্বাভাবিকভাবে পাড়ের দিকে আসছে। সাথে সেই ভিডিও করা মানুষটা।

বুঝছি। - বড় একটা দম নিয়ে বললো ইশি।

কি বুঝছিস?  - প্রশ্ন করলো গুলু।

এই শালারা মনে হয় এই পানির ভিতরে টিকটক বানাইতে গেছিল। - উত্তর দিলো ইশি।

হইতে পারে। সমুদ্র পাড়ে ঘুরতে আসা অনেক মানুষকে দেখছি সামনে একজনের কাছে ক্যামেরা দিয়ে হুদাই ক্যামেরার সামনে ফাল পাড়াপাড়ি করে। - ইশির সাথে যোগ করলো ইকি।

কি এক কান্ড বল! মানুষটা পানিতে ডুবে মরে যাচ্ছে ভেবে আমরা তারে বাঁচানোর জন্য কেমন উতলা হয়ে উঠছি! - বললো টুকি।

মানুষের ভিতরে পশুপাখি প্রেম কম থাকলেও আমাদের ভিতরে মানব প্রেমে কোন ঘাটতি নেই। - যোগ করলো তাহি।

মানুষের প্রতি এত প্রেম দেখাইয়ে কোন লাভ তো পাই না। মানুষের ভিতর একমাত্র জাকির ছাড়া আমি তো কাউরে ভালো দেখি না। - বললো গুলু।

জেটিঘাটে একটা মানুষকে ডাক্তার আবিদা সুলতানার মানসিক স্বাস্থ্য বই পড়তে দেখলাম না? মনটা চায় এই টিকটকারকে ওই বইটা পড়তে দিই। - যেন মেজাজ হারালো ইকি।

শোন, যারা বই পড়ে ওরা অন্য মন মানসিকতার মানুষ। শান্ত মস্তিষ্কের। চিল্লাপাল্লা, ফাল পাড়াপাড়ি থেকে ওরা সবসময় একশ হাত দূরে থাকে। বই ই ওদের সবচে ভালো বন্ধু। ওরা অন্য মানুষের থেকে নতুন নতুন বইয়ের সাথে মিশতে ভালোবাসে। ওই টিকটকারকে দিয়ে বই পড়াতে পারবি না। - বললো ইশি।

বই পড়াতে পারবো না মানে? এইটা কোনো ব্যাপার নাকি? আমরা পাঁচ বন্ধু পাঁচ দিকে বসে ওরে যদি মাঝখানে বসায়ে বলি যে বইটা পড়, তারপর তোর ছুটি। ও তো কোনো প্রতিবাদ না করেই বই মুখস্ত করা শুরু করে দেবে। তবে যদি ওর মানসিক স্বাস্থ্যের একটু উন্নতি হয়।

 

 

 

 

সব বন্ধুরা মিলে জাকিরের দোকানে টিভিতে সিনেমা দেখছে। খাবার জোগাড় করা ছাড়া এটা তাদের সারাদিনের আরেকটা অগুরুত্বপূর্ণ কাজ।

নায়ক লাল পানি দিয়ে নেশা করতেছে। আর নায়িকা নায়ককে খুব বকাবকি করছি নেশা করার জন্য।

নায়ক নায়িকাকে বোঝাচ্ছে যে নেশার মতো ভয়াবহ জিনিস এই পৃথিবীতে আর দ্বিতীয় টি নেই।

তখন নায়িকা উত্তর দিলো - তাহলে নেশা করেছো কেন? তোমাকে না কতবার মানা করেছি আমি? আমার কোন কথা তুমি শোনো না।

তখন নায়ক আবার বলে - নেশার মত ভয়াবহ রকমের সুন্দর জিনিস এই পৃথিবীতে আর নেই।

নায়িকা নায়ককে থামিয়ে দিয়ে বলে - আল্লার দোহাই লাগে তুমি একটু থামো। এই মাতাল অবস্থায় পুলিশে ধরলে কি হবে বুঝতেছো? মান সম্মান তো যাবেই। যে কয় টাকার মদ খাইছো তার ১০ গুণ টাকা দিতে হবে। না হলে একেবারে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যাবে।

তখন নায়ক বলে - সেকি তুমি থানাতে থাকো? আমার হবু শ্বশুর কি পুলিশ? জানতাম না তো।

নায়িকা নায়ককে ধমক দিয়ে বলে - মাতলামি বাদ দাও।

নায়ক উত্তর দেয় - কে বলেছে আমি মাতলামি করছি?

নায়িকা প্রশ্ন করে - আচ্ছা নেশার ভিতরে কি এমন আছে যেটা করতে হবে?

নায়ক আবারো উত্তর দেয় - আমি কি খেতে চেয়েছি নাকি? নেশা আমাকে খেয়েছে। নেশা কি মানুষও করে নাকি? নেশা করে মহা মানুষ।

নায়িকা বকা দিয়ে বললো - একদম মাতলামি করবা না।

তখন নায়ক উত্তর দেয় যে - আমি মাতাল না। আমি যদি মাতালই হইতাম তাহলে এই যে তুমি আমার প্রেমিকা, এটা বলতে পারতাম? আমি একদম ঠিক আছি। কি করলে তুমি বিশ্বাস করবে যে আমি ঠিক আছি। বলো, আমি সেটাই করবো। আমি এখন সাঁতার কেটে বাংলা চ্যানেল পার হতে পারবো। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া দৌঁড়ে চলে যেতে পারবো। এমন কি আমার হবু শ্বশুরের সামনেই গিয়ে তাকে বলতে পারবো- চৌধুরী সাহেব আপনার মেয়েকে আমি ভালোবাসি।

নায়িকা জিজ্ঞেস করে - হুম, তারপর?

নায়ক আবারো উত্তর দেয় - তারপর চৌধুরী সাহেব আমাকে বলবে বামন হয়ে আকাশের চাঁদ ধরতে চাস? কত টাকা লাগবে তোর আমার মেয়েকে ভুলে যেতে? তখন আমি বলবো এগজ্যাক্ট ফিগার তো বলতে পারবো না। আপনি আমাকে একটা ব্ল্যাংক চেক দেন।

নায়িকা রেগে গিয়ে বলে - মাতাল হয়েও টাকা তো ঠিকই চেনো। টাকার জন্য আমাকে ভুলে যাবা?

নায়ক বলে - চৌধুরী সাহেবের মেয়ে, আমি তোমাকে আগেই বলেছি আমি জাতে মাতাল তালে ঠিক। চৌধুরী সাহেবের থেকে টাকা নেবো ঠিক ই। কিন্তু তোমাকে ভুলে যাবো না।

নায়িকা জিজ্ঞেস করে - তাহলে?

নায়ক বলে - চৌধুরী সাহেবের একাউন্ট থেকে সব টাকা নিজের একাউন্টে নিয়ে পরদিন আবারো যাব চৌধুরী সাহেবের সামনে। তারপর চৌধুরী সাহেবকে বলবো- চৌধুরী সাহেব। কাল তো আমি গরিব ছিলাম বলে আপনার মেয়ের সাথে আমাকে বিয়ে দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। আমি এখন অনেক টাকার মালিক। আর আপনি পথের ফকির। আপনার মেয়েকে সারা জীবন সুখে রাখার জন্য এই টাকা ই যথেষ্ট। তাছাড়া সে আপনার কাছে থাকলে আপনি তার মাসের হাত খরচের টাকাও দিতে পারবেন না। আপনার মেয়েকে আমার সাথে বিয়ে দিতে রাজি হয়ে যান।

নায়িকা বলে - তারপর?

নায়ক উত্তর দেয় - তারপর রাজি না হলে থ্রেড দেবো, থ্রেট দেবো। তারপরও রাজি না হলে সে দেখবে আমার আসল রূপ। যতক্ষণ না সে রাজি হবে ততক্ষণ তার পা জড়িয়ে ধরে বসে থাকবো। পা ছাড়বো না।


২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে বীর শহিদ ও অকুতোভয় আন্দোলনকারীদের স্মরণে ও সম্মানে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট নিয়ে শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস বাংলা বসন্ত। অর্ডার করতে ক্লিক করুন

No comments

Powered by Blogger.